গত মে মাসে হঠাৎ করেই ঢালিউড অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তারের খবর যেন গোটা শিল্পাঙ্গনকে চমকে দিয়েছিল। থাইল্যান্ডে যাওয়ার পথে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর জানা যায়, ভাটারার একটি হত্যা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনার পর থেকে দীর্ঘ চার মাস তিনি ছিলেন অনেকটাই নিশ্চুপ। সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক থেকে প্রচারিত একটি বাংলা গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই কঠিন সময় এবং এর পেছনের সব ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন।
গ্রেপ্তার থেকে মুক্তি: নুসরাতের অভিজ্ঞতা
এই সাক্ষাৎকারে নুসরাত ফারিয়া অকপটে জানান, এমন একটি পরিস্থিতির জন্য তিনি মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না। তিনি বলেন, “আমি কখনও দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি যে আমার জীবনে এমন কিছু ঘটবে।” একজন মানুষের জীবন যখন স্কিন কেয়ার, মেকআপ, কেনাকাটা, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর মতো সহজ-সরল বিষয়গুলো নিয়ে সাজানো, তখন হঠাৎ করে এমন জটিলতা মানসিকভাবে তাঁকে হতাশ করে দেয়।
তবে, এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন। তাঁর মতে, “পরিস্থিতি মানুষকে বড় করে।” এই ঘটনা তাঁকে মানসিকভাবে আরও পরিণত করেছে। গ্রেপ্তার হওয়ার মাত্র ১০-১৫ দিনের মধ্যেই তিনি আবার কাজে ফিরে আসেন, যা প্রমাণ করে তাঁর মানসিক দৃঢ়তা। এই অভিজ্ঞতা তাঁকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিয়েছে—জীবন খুবই অনিশ্চিত এবং কোনো কিছুই স্থায়ী নয়। যেকোনো সময় যেকোনো কিছু ঘটতে পারে, তাই মানসিকভাবে সবসময় প্রস্তুত থাকা উচিত।
মানুষের ভালোবাসা ও সমর্থনের প্রতি কৃতজ্ঞতা
এই কঠিন সময়ে নুসরাত ফারিয়া সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি। তিনি বলেন, তাঁর কাজের কারণে তিনি দেশের মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছেন, তা তাঁকে এই বিপদ থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করেছে। তাঁর পরিবার, বাবা-মা, ভাই-বোন এবং মিডিয়া জগতের সহকর্মীরা যেভাবে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাতে তিনি অভিভূত।
নুসরাত জানান, তাঁর গ্রেপ্তারের পর মিডিয়ার সহকর্মী এবং সাংবাদিকেরা তাঁর জন্য কথা বলেছেন, এমনকি কেঁদেছেনও। তাঁর মতে, একজন শিল্পী হিসেবে এর চেয়ে বড় অর্জন আর কিছু হতে পারে না। এই ভালোবাসা ও সমর্থনই তাঁকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সাহায্য করেছে। তিনি বিশ্বাস করেন, যদি কোনো ব্যক্তি সৎ থাকেন, তাহলে কোনো খারাপ শক্তিই তাঁকে আটকে রাখতে পারে না। বিপদ আসবে, কিন্তু সৃষ্টিকর্তা নিজেই সেখান থেকে রক্ষা করবেন।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা নুসরাত ফারিয়ার ঘটনা থেকে শেখা যায়
- মানসিক প্রস্তুতি: জীবনে অপ্রত্যাশিত কঠিন পরিস্থিতি আসতে পারে। এর জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা জরুরি।
- সত্য ও সততা: নিজের প্রতি সৎ থাকলে যেকোনো বিপদ থেকে উত্তরণ সম্ভব।
- জনপ্রিয়তার শক্তি: একজন শিল্পীর প্রতি মানুষের ভালোবাসা এবং মিডিয়ার সমর্থন তাঁকে কঠিন সময়ে সাহস জোগাতে পারে।
0 Comments